বাংলাদেশকে বিপজ্জনক বর্জ্যের ভাগাড় হতে দেওয়া যাবে না - পরিবেশ উপদেষ্টা
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, বাংলাদেশকে বিপজ্জনক বর্জ্যের ভাগাড় হতে দেওয়া যাবে না। জরুরি সংস্কার না হলে বাংলাদেশ বিপজ্জনক বর্জ্যের ভাগাড়ে পরিণত হবে। তিনি জাহাজ ভাঙা শিল্পে কঠোর পরিবেশ আইন প্রয়োগ ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
উপদেষ্টা আজ ঢাকায় হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘বাংলাদেশের জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াকরণ ও বিপজ্জনক বর্জ্যব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত জাতীয় নিয়ন্ত্রক কাঠামো’ শীর্ষক কর্মশালায় এ আহ্বান জানান।
রিজওয়ানা হাসান জাহাজ ভাঙা শিল্পের মানবিক ও পরিবেশগত ক্ষতির দিক তুলে ধরে বলেন, এ শিল্প মানবজীবনের বিনিময়ে চলতে পারে না। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী জোয়ার-ভাটা অঞ্চলে জাহাজ ভাঙার কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে এবং এ সিদ্ধান্তকে জাতীয় নীতিতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। তিনি আরো বলেন, এ শিল্প যদি আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনে না চলে, তাহলে এটি টিকিয়ে রাখার কোনো প্রয়োজন নেই। পরিবেশ মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত, যাতে বাংলাদেশকে বিষাক্ত বর্জ্যের ভাগাড় হওয়া থেকে রক্ষাসহ শ্রমিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা যায়।
উপদেষ্টা বলেন, জাহাজ ভাঙা শিল্পের শ্রমিকরা মারাত্মক ঝুঁকির মুখে থাকেন, অথচ তাদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেই। তিনি পোশাক শিল্পের সঙ্গে জাহাজ ভাঙা শিল্পের তুলনা করে বলেন, পোশাক শিল্পে বিদেশি ক্রেতারা শ্রমমান বজায় রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করেন কিন্তু জাহাজ ভাঙা শিল্পের মালিকরা তাদের দায়িত্ব এড়িয়ে যান। উপদেষ্টা প্রশ্ন করেন, যে দেশে ইস্পাতের বেশিরভাগ চাহিদা বিদেশ থেকে পূরণ হয়, সেদেশে এতো ঝুঁকি নিয়ে কেন জাহাজ ভাঙতে হবে?
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, পরিবেশ আইন কার্যকর না হলে, এ শিল্প কেবল সবুজায়নের নামে বৈধতা পাবে। ইউরোপের কোম্পানি জাহাজগুলোকে ছোট দ্বীপ রাষ্ট্রের নামে নিবন্ধন করে বাংলাদেশে পাঠায়। তিনি জানতে চান, ইউরোপের কোনো দেশে সমুদ্রতটে জাহাজ ভাঙার অনুমতি দেওয়া হয় কিনা। তিনি উল্লেখ করেন, কিছু শিপইয়ার্ড এখনো বৈধ পরিবেশগত ছাড়পত্র ছাড়াই কাজ করছে, যেখানে সম্প্রতি একজন শ্রমিক গুরুতর আহত হয়েছেন। তাই শ্রমিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া, পরিবেশ রক্ষায় উচ্চ আদালতের নির্দেশনা কার্যকর করা জরুরি।
অনুষ্ঠানে শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব জাকিয়া সুলতানা এবং বাংলাদেশে নরওয়ের রাষ্ট্রদূত হকন আরাল্ড গুলব্রান্ডসেন বক্তব্য দেন।
সূত্রঃপিআইডি