সারা দেশে যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় দুর্যোগ প্রস্তুতি দিবস পালিত
আজ সারা দেশে যথাযোগ্য মর্যাদায় বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের মধ্য দিয়ে জাতীয় দুর্যোগ প্রস্তুতি দিবস
উদ্যাপিত হয়েছে। কর্মসূচিসমূহের মধ্যে ছিল সুভ্যেনির প্রকাশ, ভিডিও ক্লিপ প্রদর্শন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন, সিপিবির স্বেচ্ছাসেবক পুরস্কার বিতরণ, ক্রোড়পত্র প্রকাশ, আলোচনা অনুষ্ঠান, গোলটেবিল বৈঠক, ভূমিকম্প ও অগ্নিকাণ্ড বিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধি মহড়া, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার ইত্যাদি ।
জাতীয় দুর্যোগ প্রস্তুতি দিবস-২০২৩ উদ্যাপনের অংশ হিসেবে আজ ঢাকায় ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে উদ্বোধন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মোঃ এনামুর রহমান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ভৌগোলিক কারণে বাংলাদেশে প্রতিনিয়তই বিভিন্ন দুর্যোগ আঘাত হানে। প্রতিবছর বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, ভূমিধ্বস, বজ্রপাতসহ নানাবিধ দুর্যোগ আমরা মোকাবিলা করে চলেছি। ঘূর্ণিঝড় আম্পান, ইয়াস, সিত্রাংও মোকাবিলা করেছি। ২০২২ সালে ঘটে যাওয়া সিলেট অঞ্চলের ভয়াবহ বন্যা সফলভাবে মোকাবিলা করা হয়েছে। আমরা ৬৪টি জেলায় ৬৫টি জেলা ত্রাণ গুদাম কাম-দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তথ্যকেন্দ্র তৈরি করেছি।’
এনামুর রহমান বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এদেশে দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাস কর্মসূচির মূল ভিত্তি গড়ে গেছেন। তাঁর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণ নেতৃত্ব ও সুশাসনে আজ তা এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা, পরিশ্রম, দূরদর্শী পরিকল্পনা ও নতুন নতুন কৌশলকে কাজে লাগিয়ে বর্তমান সরকার আজ দেশকে সারা বিশ্বের কাছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় অনুকরণীয় রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। সম্প্রতি তুরস্ক ও সিরিয়ায় সংঘটিত ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর বাংলাদেশ থেকে উদ্ধারকারী দল ও মানবিক সহায়তা প্রেরণ করা হয়েছে। এতে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরো উজ্জ্বল হয়েছে। বিগত মুজিব বর্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়নের ফলে দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশের সক্ষমতা আরো অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে ।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকার সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য চীন সরকারের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার (এনইওসি) প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু করেছে। আগামী ১৪ মার্চ ফিসিবিলিটি স্টাডি করতে চীনের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে আসবে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া সংগঠন ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) এর কার্যক্রম ও সক্ষমতা বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। জনসেবায় অবদান রাখার জন্য ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি জাতিসংঘের সম্মানজনক ‘জাতিসংঘ জনসেবা পদক-২০২১’ অর্জন করেছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ কামরুল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ বি তাজুল ইসলাম এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ মিজানুর রহমান বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ও অন্যান্য সদস্য, সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভা শেষে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) স্বেচ্ছাসেবকদের মাঝে পুরস্কার ও সনদপত্র বিতরণ করেন প্রতিমন্ত্রী।
সূত্রঃপিআইডি