অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশিদের কাছে ধরনা দেওয়া দেশবিরোধী অপতৎপরতা ও জনগণের অবমূল্যায়ন-তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহ্মুদ বলেছেন, ‘বিএনপি-জামাত বারবার বিদেশিদের কাছে ধরনা দেয়। এর অর্থ জনগণ ও জনগণের শক্তিকে অবমূল্যায়ন করা, জনগণকে তোয়াক্কা না করা। এবং দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশিদের কাছে অনুনয়-বিনয় করা দেশবিরোধী অপতৎপরতা।’
আজ জাতীয় প্রেসক্লাবে ইউনিয়ন পরিষদ মেম্বারদের জাতীয় সংগঠন বাংলাদেশ ইউনিয়ন সদস্য সংস্থা-বাইসস আয়োজিত ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যদের ভাবনা’ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ সব কথা বলেন।
বাইসস সভাপতি গোলাম সারোয়ার মিলনের সভাপতিত্বে মহাসচিব এম সাইফুল ইসলাম মোয়াজ্জেম, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত প্রমুখ সভায় বক্তব্য রাখেন।
সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘রাজনীতিবিদ ধরনা দেবে জনগণের কাছে। যারা জনগণের শক্তিতে বিশ্বাস করে তারা জনগণের কাছে ধরনা দেবে। কিন্তু জনগণের কাছে ধরনা না দিয়ে রাত বিরাতে বিএনপির তারা বিদেশিদের কাছে ধরনা দেয়। এটি দেশবিরোধী অপতৎপরতা।’
‘আমাদের ভেতরে যদি রাজনৈতিক মতদ্বৈততা বা মতবিরোধ থাকে সেটি নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা না করে বিদেশিদের কাছে নিয়ে যাওয়াও দেশবিরোধী অপতৎপরতা এবং এই কাজটি বিএনপিসহ তার মিত্ররা করছে’ উল্লেখ করেন মন্ত্রী।
‘বেগম জিয়ার স্বাস্থ্য, তারেক জিয়ার শাস্তি, তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নির্বাচন কমিশন -এই চারটি বিষয়ের মধ্যে বিএনপি ও তার মিত্রদের রাজনীতি সীমাবদ্ধ, জনগণের কোনো বিষয়াদি তাদের মধ্যে নাই' উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বেগম জিয়ার হাঁটুর ব্যথা বাড়লো কি বাড়লো না, গায়ের তাপমাত্রা ঠিক আছে কি না, সেটি নিয়ে তারা ব্যস্ত। জনগণ নিয়ে তারা ব্যস্ত নাই।’
এ সময় নির্বাচন কমিশনের প্রশংসা করেন তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, সিটি কর্পোরেশনগুলোতে স্থানীয় সরকার নির্বাচন যেভাবে হয়েছে সেটি শুধু দেশের জন্যই নয়, এই উপমহাদেশের জন্য উদাহরণ। ক’দিন আগে পশ্চিমবাংলায় পঞ্চায়েত নির্বাচন শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ৩৫ জন নিহত হয়েছে, আমাদের দেশে সেটি হয়নি।
মন্ত্রী বলেন, ‘গত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ছিল বিএনপির ওপর একটি চপেটাঘাত। কারণ বিএনপি নির্বাচনে শুধু অংশগ্রহণ করে নাই তা নয়, তাদের নেতাকর্মী-সমর্থকদের নির্বাচন বর্জন করতে বলেছে। কিন্তু তাদের আহ্বানে কেউ সাড়া দেয় নাই। জনগণ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশের বেশি মানুষ ভোট দিয়েছে।’
‘এখান থেকে বিএনপির শিক্ষা নেওয়া প্রয়োজন কারণ আগামী নির্বাচন বিএনপি বর্জন করতে পারে, জনগণ তা করবে না, জনগণ অংশ নেবে’ হুঁশিয়ারি দেন হাছান।
ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যদেরকে তৃণমূলের নেতা হিসেবে তুলে ধরে সম্প্রচারমন্ত্রী তাদেরকে বলেন, ‘নির্বাচনে জনগণের অংশগ্রহণ অনেকটা আপনাদের ওপর নির্ভর করে। তাই অনুরোধ জানাবো, গ্রামে গ্রামে ছড়িয়ে পড়ুন, আগামী নির্বাচনে যাতে জনগণ ব্যাপকভাবে অংশগ্রহণ করে, সেটির প্রচারণা করুন। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়ন অগ্রগতি যাতে অব্যাহত থাকে, সেটির পক্ষে প্রচার করুন।’
সেইসাথে যারা দেশবিরোধী অপতৎপরতায় লিপ্ত, দেশের সম্মানহানি করে বিদেশিদের হাতে-পায়ে ধরে, তাদেরকে বর্জন করুন, নিজেদের সংগঠনকে সুসংগঠিত করুন, পরামর্শ দেন হাছান মাহ্মুদ।
বাইসস সভাপতি মিলন তার বক্তব্যে বলেন, আগামী নির্বাচনে আমরা চাই অবশ্যই বিএনপিসহ সমস্ত রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করুক কিন্তু জনগণ অংশগ্রহণ করছে কি না সেটিই গণতন্ত্রের জন্য মুখ্য বিষয়।
সূত্রঃপিআইডি