নৌকায় ভোট দিন, সোনার বাংলা উপহার দেবো

নৌকায় ভোট দিন, সোনার বাংলা উপহার দেবো

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে ভোট চেয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেই উন্নয়ন হয়, আগামি নির্বাচনেও নৌকা মার্কায় ভোট দিন, সোনার বাংলা উপহার দেবো।’

বৃহস্পতিবার (২৯ মার্চ) বিকেলে ঠাকুরগাঁও জেলা স্কুলের বড় মাঠে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ মানেই উন্নয়ন। আর বিএনপি মানেই ধ্বংস, হত্যা, লুটপাট, দুর্নীতি। বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সুফল ভোগ করছে জনগণ। এই উন্নয়ন বজায় রাখতে আগামী নির্বাচনেও আওয়ামী লীগকে ভোট দেবেন।’

এসময় জনসভায় উপস্থিত নেতা, কর্মী ও সমর্থকদের কাছে ভোট চেয়ে ওয়াদা চান শেখ হাসিনা। বলেন, ‘নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন কি-না, হাত তুলে ওয়াদ করুন, জবাবে সবাই হাত তুলে প্রধানমন্ত্রীকে নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।’

এরপর বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘২০২০ সালের মধ্যে আমরা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করবো। এরমধ্যেই তার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে তুলবো। নৌকা মার্কায় ভোট দিন, আপনাদের সোনার বাংলা উপহার দেবো।’

বক্তব্যের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী দেশের উন্নয়নে তার সরকারের নানা কর্মসূচির কথা তুলে ধরে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর  প্রত্যেক উপজেলায় অবকাঠামো থেকে শুরু করে সব কিছু উন্নয়ন করা হচ্ছে। বয়স্ক ভাতা দিয়েছি- যা আওয়ামী লীগ চালু করেছে, আর কেউ দেয়নি।’

‘দেশের ৬৭ লাখ বয়স্ক মানুষকে বয়স্ক ভাতা দিচ্ছি, মানুষের কল্যাণে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছি। ৮ লাখ প্রতিবন্ধীকে মাসে মাসে ভাতা দিচ্ছি। তাদের মধ্যে ৮০ হাজারকে বৃত্তি দেওয়া হচ্ছে পড়াশোনার জন্যে।’

শিক্ষাখাতে উন্নয়ন কর্মসূচির চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘বিনামূল্যে শিক্ষার্থীদের হাতে জানুয়ারির ১ তারিখে বই তুলে দেওয়া হচ্ছে। ১ কোটি ৩০ লাখ মাকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বৃত্তির টাকা পৌঁছে দিচ্ছি। কারিগরি শিক্ষার ব্যবস্থা করেছি। প্রত্যেক উপজেলায়, প্রত্যেক স্কুল-কলেজে কাজ করছি।’

ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কথা দিয়েছিলাম ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করবো- করেছি। ১৬ কোটি মানুষের দেশে ১৩ কোটি মানুষ মোবাইলের সিম ব্যবহার করে। দেশে ৫ হাজার ২৭৫টি ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন করেছি। সেখান থেকে সব তথ্য পাওয়া যায়। গ্রামে গ্রামে গিয়ে তথ্য আপারা কাজ করছেন।’

‘এছাড়া মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতার পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। তাদের কল্যাণে নানা প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীকে বিশেষ ভাতা দিচ্ছি।’ 

তথ্য-প্রযুক্তির অগ্রগতি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সামনের মাসে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা হচ্ছে। এতে সব কিছুর সুযোগ-সুবিধা বাড়বে।’

‘সাধারণ মানুষের চিকিৎসার জন্য কমিউনিটি ক্লিনিক করে দিয়েছি। ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিকে ৩০ প্রকার ওষুধ বিনা পয়সায় দেওয়া হচ্ছে। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর এ প্রকল্পটি চালু করি। কিন্তু ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দেয়। ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসার পর আমি ২০০৯ সালে এটি ফের চালু করে দিয়েছি। এখন নিরাপদ সন্তান প্রসব থেকে শুরু করে সব ধরনের ব্যবস্থা সেখানে রয়েছে।’

বক্তব্যে ঠাকুরগাঁওয়ের সন্তান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সমালোচনা করেন শেখ হাসিনা। বলেন, ‘একজন আছেন, কথা বলতে বলতে গলা ব্যথা করে ফেলেছেন, সেজন্য ডাক্তারের কাছে যেতে হয়। এরা (বিএনপি) ধ্বংস করতে জানে, সৃষ্টি করতে জানে না, বিএনপির আমলে বাংলাদেশ বিশ্বে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়। তারা দুর্নীতিবাজ, লুটপাট করেছে, তা প্রমাণিত।’

ঠাকুরগাঁওয়ে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনেরও প্রতিশ্রুতি দেন শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কথাও বলেন তিনি। 

জনসভায় আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা ছাড়াও স্থানীয় পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। 

ছবিঃ পিআইডি

সংবাদঃ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম