অপ্রয়োজনে সিজার করলেই ব্যবস্থা: স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী

অপ্রয়োজনে সিজার করলেই ব্যবস্থা: স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, গর্ভবতী মায়েদের অপ্রয়োজনে সিজার (অপারেশন) করলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রোববার (২৭ মে) সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মলেন তিনি এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।

তিনি বলেন, দেশের বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ গর্ভবতীকে বাচ্চা প্রসবের জন্য সিজার করা হচ্ছে। নিরাপদ মাতৃত্বের জন্য এটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এটি কখনোই আমাদের কাম্য নয়। 

স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ, সিজারের মাধ্যমে বাচ্চা প্রসব প্রতি হাজারে ১৫-২০ শতাংশের মধ্যে রাখতে হবে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, অকারণে সিজার কমাতে আমরা একটি ফর্ম তৈরি করে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে পাঠিয়েছি। সেখানে রোগীর পুরো তথ্য দিতে হবে। অপ্রয়োজনে সিজার করে মায়ের ক্ষতি করে দিলেন, কেন তাকে সিজার করতে হলো, কি কি অসুবিধা ছিল, মায়ের অনুমতি নেওয়া হয়েছে কিনা, স্বামীর অনুমতি নেওয়া হয়েছে কিনা, কি কি জটিলতা ছিল; সবকিছু উল্লেখ করতে হবে। এই ফরমটি আমাদের কাছে এলে তা দেখার পর বোঝা যাবে অপারেশনটি প্রয়োজন ছিলো কিনা। এছাড়াও আমরা হাসপাতালগুলোতে নির্দেশনা দিয়েছি বিনা কারণে, অপ্রয়োজনে সিজার না করার জন্য। 

স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে সিজারের হার অনেক বেড়ে গেছে। প্রাতিষ্ঠানিক বাচ্চা প্রসব হয় ৪২ শতাংশ। সরকারি হাসপাতালে ২৫-৩০ শতাংশ মায়ের সিজারে বাচ্চা প্রসব করানো হয়। আমরা সিজারের মাধ্যমে বাচ্চা প্রসব কমাতে মিডওয়াইফ তৈরির উপর জোর দিয়েছি। চিকিৎসকের মাধমে করাতে গেলেই সিজারে চলে যায়। কারণ চিকিৎসকরা সময় দিতে চান না। একটি দিন ধৈর্য ধরেন। বিশ্বব্যাপী প্রসবগুলো মিডওয়াইফরাই করে থাকেন। এজন্য ৩৪ হাজার মিডওয়াইফকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। ১৫ হাজার নার্স নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, গর্ভবতী ও প্রসব পরবর্তী সেবার জন্য সারাদেশের ৩৪ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক ও স্বাস্থ্যকর্মীর মাধ্যমে বিনামূল্যে ওষুধ ও  পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। দরিদ্র মায়ের পুষ্টিহীনতা দূর করতে মাতৃত্বকালীন ভাতা ও প্রসবের সময় হাসপাতালে যাওয়ার জন্য ফ্রি অ্যাম্বুলেন্স সেবা দেওয়া হচ্ছে। মাতৃমৃত্যু হার এখন হাজারে ১৭৬ জন ও শিশুমৃত্যু ২১ জন। সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে শিশুমৃত্যু হার ১২ শতাংশে নামিয়ে আনতে হবে। 

 

জাহিদ মালেক বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠান নয়, সব ধরনের বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, কলকারখানা ও পোশাক কারখানায় ব্রেস্টফিডিং কর্নার করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। 

এসময় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। 

‘কমাতে হলে মাতৃমৃত্য হারমিডওয়াইফ পাশে থাকা একান্ত দরকার’, প্রতিপাদ্যে শুরু হওয়া নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস উপলক্ষে সোমবার (২৮ মে) বঙ্গবন্ধু আর্ন্তজাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে র‌্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করবে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। সেখানে জাহিদ মালেক উপস্থিত থাকবেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। 

সূত্রঃ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ছবিঃ পিআইডি