আমাদেরও ধৈর্যের সীমা আছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

আমাদেরও ধৈর্যের সীমা আছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

ছাত্র বিক্ষোভ নিয়ে চলমান উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যথেষ্ট ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, এর মানে এই নয় যে, এ বিষয়কে কেন্দ্র করে অরাজকতা চলতে থাকবে আর পুলিশ চুপ করে বসে দৃশ্য দেখবে। আমাদেরও ধৈর্যের সীমা আছে, সীমা অতিক্রম করলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

রোববার (০৫ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর গুলিস্তান জিরো পয়েন্টে ‘ট্রাফিক সপ্তাহ-২০১৮’ উদ্বোধনকালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন গুজবের বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সামাজিক মাধ্যমজুড়ে শুধু মিথ্যাচার আর গুজব। একজন অভিনেত্রী গতকাল (শনিবার) কীভাবে কথাগুলো বললেন, কীভাবে অভিনয়টা করলেন আপনারা তা দেখেছেন। একটি মহল কোমলমতি শিক্ষার্থীদের দাবি ভিন্নখাতে নিয়ে যেতে এই অপতৎপরতা চালাচ্ছে। 

‘একজন দায়িত্বশীল নেতা কুমিল্লা থেকে ঢাকায় এসে আক্রমণ করার আহ্বান জানাচ্ছেন। ঢাকায় প্রবেশের সময় আমরা এমনসব ছাত্রবেশী লোকজনকে আটক করেছি, যাদের ব্যাকপ্যাক ভর্তি পাথর। এ কয়েকদিনে হাজার হাজার স্কুল ড্রেস তৈরি করা হয়েছে, হাজার হাজার আইডি কার্ড বানানো হলো। আইডি কার্ড ঝুলিয়ে অছাত্ররা কোমলমতি ছাত্রদের আন্দোলনে প্রবেশ করেছে।’

এ ধরনের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পুলিশ যথেষ্ট ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।  

আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, পাকিস্তান-দিল্লির বিভিন্ন ঘটনা এ দেশের বলে প্রচার করা হচ্ছে। আমাদের নেতাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন আপত্তিকর পোস্ট ছড়ানো হচ্ছে। তারা যদি এসব অপতৎপরতা পরিহার না করে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবির সবকটিই পূর্ণ হয়েছে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদের নানা অপপ্রচার চালিয়ে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। তাই ছাত্র ও অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান, তারা যেন রাস্তা থেকে ফিরে যান।

সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে ইন্টারনেট স্বাভাবিক হয়ে গেছে বলেও জানান মন্ত্রী। 

ট্রাফিক সপ্তাহ উদ্বোধন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা কেউ ট্রাফিক আইন মানি না। এগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতেই দেশব্যপী ট্রাফিক সপ্তাহ। সারাদেশে দুর্ঘটনার মাত্রা এতো বেড়ে গেছে, যা ভয়ংকর রূপ নিয়েছে। আইন মানলে দুর্ঘটনা কমে আসবে, জনদুর্ভোগ কমবে।

‘ট্রাফিক সপ্তাহ উদ্বোধনের মাধ্যমে আইন মেনে চলার প্রক্রিয়া শুরু হলো, সারাবছর যেন এটা চলমান থাকে সে প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’

চার কারণে রাজধানীতে ট্রাফিক অব্যবস্থাপনার কথা জানিয়ে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, এডুকেশন, ইঞ্জিনিয়ারিং, এনভায়রনমেন্ট ও এনফোর্সমেন্ট ট্রাফিক অব্যবস্থাপনায় এই চার ‘ই’ দায়ী। আইন মেনে চলতে বাধ্য করার জন্য আইন তৈরি হয় না। 

‘আইন তৈরি হয়, সবাই মেনে চলবে আর দুই-একজন ভায়োলেন্ট করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু আমাদের দেশে বাধ্য করে সবাইকে আইন মানাতে হয়।’

সবাইকে সঙ্গে নিয়ে ট্রাফিক আইন নিশ্চিত করার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আশা করবো কেউ অযথা রাস্তায় জমায়েত করে জনগণের স্বাভাবিক চলাচল বিঘ্নিত করবেন না।

ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ডিএমপিতে যানজট সবচেয়ে বড় সমস্যা। সমাধানে সবাই মিলে দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছি। আমাদের আইন না মানার প্রবণতাই ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এই মানষিকতার পরিবর্তন না হলে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা কষ্টকর হবে।

‘আজ থেকে স্কাউট ও গার্লস গাইডের সহযোগিতায় ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। কেউ যদি এর সঙ্গে সহায়তা না করে উল্টো রাস্তায় নেমে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে, সেটি হবে দুর্ভাগ্যজনক।’

ট্রাফিক সপ্তাহের মাধ্যমে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় যে গতি শুরু হবে তা চলমান রাখার আশাবাদ ব্যক্ত করেন ডিএমপি কমিশনার।

ট্রাফিক সপ্তাহ উদ্বোধন শেষে ট্রাফিক জনসচেতনতায় জনসাধারণেল মাঝে লিফলেট বিতরণ করা হয়। 

সূত্র ও ছবিঃ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম