জঙ্গি আটক করলেই বিএনপির গাত্রদাহ কেন : প্রশ্ন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রীর

জঙ্গি আটক করলেই বিএনপির গাত্রদাহ কেন : প্রশ্ন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রীর

 

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহ্‌মুদ বলেছেন, ‘জঙ্গি ধরলেই বা জঙ্গিদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করলেই দেখি মির্জা ফখরুল সাহেব কিংবা বিএনপি নেতারা সেটির বিরুদ্ধে কথা বলে। আমার প্রশ্ন হচ্ছে- জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করলে তাদের গাত্রদাহ হয় কেন।’ 

 

আজ সচিবালয়ে তথ্য অধিদফতর সম্মেলন কক্ষে ‘শেখ মুজিবুর রহমান থেকে জাতির পিতা’ আলোকচিত্র সংকলন এবং ‘রক্তাক্ত মাগুরা : প্রেক্ষিত-মুক্তিযুদ্ধ’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন। প্রধান তথ্য অফিসার মো. শাহেনুর মিয়া, সিনিয়র উপপ্রধান তথ্য অফিসার খালেদা বেগম, গ্রন্থকার বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুন নাহার, মোহাম্মদ নাছিমুল কামাল, প্রকাশক আবু হাশেম প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন। 

 

বিএনপি মহাসচিবের সাম্প্রতিক মন্তব্য ‘দেশে জঙ্গি নেই, আওয়ামী লীগ সাজানো জঙ্গি নাটক করছে’ এ নিয়ে সাংবাদিকদের প্র্রশ্নে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘যেমন চেয়ারম্যান, তেমন মহাসচিব। আগে বেগম খালেদা জিয়া বলেছিলেন যে, দেশে কোনো জঙ্গি নাই, কিছু মানুষকে ধরে এনে আটক করে রাখা হয়, তারপর চুল-দাড়ি লম্বা হলে জঙ্গি আখ্যা দেওয়া হয়। আর গতকাল ফখরুল সাহেব বলেছেন, কিছু ধার্মিক লোককে ধরে নিয়ে গিয়ে জঙ্গি আখ্যা দেওয়া হচ্ছে। চেয়ারম্যান যে লাইনে কথা বলেছেন, মহাসচিব যদি সেই লাইনে কথা না বলেন তাহলে তো মহাসচিবের দায়িত্ব থাকবে না। এই সমস্ত বক্তব্যের মাধ্যমে এটিই প্রমাণিত হয়- এই দেশে জঙ্গিদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক হচ্ছে বিএনপি এবং বিএনপির নেতৃত্ব, যেটি আমরা আগে থেকে বলে এসেছি।’

 

‘বিএনপি যদি জঙ্গিদের পৃষ্ঠপোষকতা না করতো, আমরা জঙ্গি নির্মূল করতে পারতাম’ উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘কারণ বিএনপির যে জোট, সেই জোটের মধ্যেই জঙ্গিরা আছে। এবং বিএনপি নিজেই একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে কানাডার আদালত কর্তৃক পরপর পাঁচবার রায় পেয়েছে। আমেরিকার হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিএনপিকে টায়ার-ফোর সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করেছে। সুতরাং তারা নিজেরা যেহেতু সন্ত্রাসী, সে জন্য কোনো জঙ্গি ধরলে তাদের গাত্রদাহ হয়।’ 

 

২৫ ও ২৬ আগস্ট বিএনপির কর্মসূচি নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের গণ-মিছিল, হাঁটা-মিছিল, দৌড়ানো-মিছিল, বসা-কর্মসূচি শুধু তাদের কর্মীদেরকে চাঙ্গা রাখার জন্য। জিও-পলিটিক্স বা ভূ-রাজনীতির যেসব খবর পত্র-পত্রিকায় এসেছে সেগুলোর কারণে তাদের মধ্যে হতাশা- অস্থিরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে, সে জন্য তারা রাত তিনটার সময়ও সংবাদ সম্মেলন ডাকছে। এ সব কারণে তাদের হতাশ কর্মীদেরকে চাঙ্গা রাখার জন্যই গতানুগতিক কর্মসূচি, অন্য কোনো কিছু নয়।’ 

 

বিএনপির দু’টি টেলিভিশনের ‘টক-শো’ বর্জনের ঘোষণা নিয়ে প্রশ্নে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘এতে তারা সেখানে গিয়ে কথা বলার সুযোগটা হারাচ্ছে। এখন দু’টি বর্জন করেছে, ক’দিন পর আরো চারটি বর্জন করে কি না, আরো ক’দিন পরে বলে কি না গণমাধ্যমই বর্জন করলাম, সেটিই আমার আশঙ্কা।’ 

 

ব্রিকস সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর যোগদান সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ব্রিকস উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর জোট। সেখানে আমন্ত্রণ জানানোর মানেই হচ্ছে বাংলাদেশ যে উদীয়মান অর্থনীতির দেশ সেটিকে স্বীকার করে নেওয়া। এই জোটে যোগ দিলে আমাদের অর্থনীতি আরো চাঙ্গা হবে এটিই স্বাভাবিক।’

এর আগে ‘রক্তাক্ত মাগুরা : প্রেক্ষিত-মুক্তিযুদ্ধ’ গ্রন্থের লেখিকা বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুন নাহারকে ধন্যবাদ জানান তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী। তিনি বলেন, জেলাভিত্তিক মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এক অনন্য দলিল। শামসুন নাহারের লেখা গ্রন্থটি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে সংরক্ষণ করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে । সে জন্য তাকে ধন্যবাদ জানাই, কৃতজ্ঞতা জানাই। পাশাপাশি  ‘শেখ মুজিবুর রহমান থেকে জাতির পিতা’ গ্রন্থে বঙ্গবন্ধুর দুর্লভ কিছু আলোকচিত্র সংকলনের জন্য নাছিমুল কামালকেও ধন্যবাদ জানাই।

 

সূত্রঃপিআইডি