উন্নত বিশ্বকে শুধুমাত্র আর্থিক ক্ষতিপূরণ প্রদান করলেই হবে না, প্রযুক্তিগত জ্ঞানও প্রদান করতে হবে -স্বাস্থ্যমন্ত্রী
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, আমরা বর্তমানে প্রযুক্তিগত উন্নয়নের যুগে বাস করছি, যা জীবনযাত্রায় দ্রুত বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে। তবে প্রযুক্তিগত উন্নয়নের নেতিবাচক প্রভাব উন্নয়নশীল এবং দ্বীপ দেশগুলিকে জলবায়ু পরিবর্তন এবং সম্পদের ঘাটতির কারণে বিপর্যয়ের গভীরতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, প্রযুক্তিগত জ্ঞান শুধুমাত্র উন্নত দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা উচিত নয় বরং প্রযুক্তিগত জ্ঞান উন্নত দেশসমূহ থেকে উন্নয়নশীল দেশের সাথে অবশ্যই দ্রুত সময়ে আদান প্রদান করতে হবে। উন্নত বিশ্বকে শুধুমাত্র উন্নয়নশীল দেশগুলোকে আর্থিক সহায়তা দিয়েই ক্ষতিপূরণ প্রদান করলে হবে না, প্রযুক্তিগত জ্ঞান অবশ্যই প্রদান করতে হবে।
মন্ত্রী কিউবার রাজধানী হাভানায় অনুষ্ঠিত গত ১৬ সেপ্টেম্বর G77 প্লাস চায়না শীর্ষ সম্মেলনে বাংলাদেশের Country Statement-এ এসব কথা বলেন।
কিউবার হাভানায় অনুষ্ঠিত ১৫-১৬ সেপ্টেম্বর G77 প্লাস চায়না শীর্ষ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিনিধিত্বকারী প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। সম্মেলনে ১১৬টি দেশ এবং ১২টি সংস্থা এবং জাতিসংঘ (UN) ব্যবস্থার সংস্থার ১৩০০ জনেরও বেশি প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করে। সম্মেলনে ৩১ জন রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান, ১২ জন ভাইস-প্রেসিডেন্ট, কেবিনেট মন্ত্রী এবং অন্যান্য উচ্চ-পর্যায়ের সদস্য রাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। কিউবার রাষ্ট্রপতি Miguel Diaz-Canel ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩-এ G77 প্লাস চায়না সামিট এর চেয়ারম্যান ও কিউবার রাষ্ট্রপ্রধান হিসাবে এই শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন।
দুই দিনের শীর্ষ সম্মেলনে প্রথমেই সকল সদস্য রাষ্ট্র বিতর্ক সেশনে নিজ নিজ দেশের পক্ষে Country Statement প্রদান করে। ইতোপূর্বে, প্রতিনিধিদলগুলি একটি স্বচ্ছ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক আন্তঃসরকারি আলোচনা প্রক্রিয়ার ফলস্বরূপ ৪৭টি বিষয়সহ G77 প্লাস চীন গ্রুপের শীর্ষ সম্মেলনের রাজনৈতিক ঘোষণা গ্রহণ করতে সকল সদস্য রাষ্ট্রসমূহ সম্মত হন।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় করোনা মহামারি সংকট সফলভাবে পরিচালনা করেছিলেন এবং সংকট ব্যবস্থাপনার জন্য উক্ত সময়ে সংশ্লিষ্ট দেশগুলি থেকে সময়মতো ভ্যাকসিন এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সরঞ্জামাদি প্রাপ্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে করোনা মহামারী ব্যবস্থাপনা অজানা ছিল তাই মহামারী ব্যবস্থাপনার প্রাথমিক দিনগুলি মোকাবিলা ছিল চ্যালেঞ্জিং। এই অভিজ্ঞতাকে সামনে রেখে উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে সকল সেক্টরে প্রযুক্তিগত জ্ঞানের আদান-প্রদান নিশ্চিত করতে হবে।
সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, ইয়েমেন, লিবিয়া, কিউবাসহ জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সচিব এর সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। তাঁরা নিজ নিজ দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা করেন। সম্মেলনে অটোয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের মিনিস্টার দেওয়ান হোসনে আইয়ুর, প্রথম সচিব ও দূতালয় প্রধান হাসান আল্ বাশার আবুল উলায়ী ও মন্ত্রীর একান্ত সচিব তাঁর সফরসঙ্গী ছিলেন।
শীর্ষ সম্মেলনের শেষদিন ১৬ সেপ্টেম্বর ৪৭-আর্টিকেল হাভানা চূড়ান্ত ঘোষণাপত্র গ্রহণ করা হয়। সমাপনী বক্তব্যে কিউবার প্রধানমন্ত্রী Manuel Marrero Cruz কিউবার জনগণ ও সরকারের পক্ষ থেকে অংশগ্রহণকারী সকল সদস্য রাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানান।
সূত্রঃপিআইডি