কপ-২৯ এর সাইড ইভেন্টে অভিযোজন তহবিল বৃদ্ধির আহ্বান পরিবেশ উপদেষ্টার

কপ-২৯ এর সাইড ইভেন্টে অভিযোজন তহবিল বৃদ্ধির আহ্বান পরিবেশ উপদেষ্টার

 

 

বাংলাদেশের পরিবেশ, বন, জলবায়ু পরিবর্তন ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর জন্য শক্তিশালী অভিযোজন তহবিল নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি উল্লেখ করেন, অভিযোজন তহবিল বাড়ানোর জন্য অতিরিক্ত আর্থিক প্রবাহ না থাকলে বাংলাদেশ-সহ ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর টেকসই উন্নয়ন হুমকির মুখে পড়বে।

 

গতকাল আজারবাইজানের বাকুতে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন (কপ-২৯)-এর ‘গভর্ন্যান্স ফর স্ট্রেনদেনিং এসডিজি ক্লাইমেট সিনার্জিস’ শীর্ষক সাইড ইভেন্ট-১ ব্লু জোনে বক্তব্যে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

 

রিজওয়ানা হাসান উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর একটি, যা দক্ষিণ এশিয়ার নিম্নভূমি ডেল্টা অঞ্চলে অবস্থিত। তিনি ব্যাখ্যা করেন যে, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, অতিরিক্ত তাপমাত্রা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বন্যা ও ঘূর্ণিঝড় লাখ লাখ মানুষের জীবন-জীবিকাকে হুমকির মুখে ফেলছে। এসব প্রভাব দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ওপর অধিকতর প্রভাব ফেলছে এবং বাংলাদেশকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।

 

অর্থায়নের ঘাটতি নিয়ে আলোচনাকালে তিনি উল্লেখ করেন, অভিযোজন কার্যক্রমে বাংলাদেশকে প্রতি বছর ৮ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রয়োজন, তবে দেশের অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে মাত্র ৩ বিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করা সম্ভব হচ্ছে, ফলে ৫ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার ঘাটতি রয়ে যাচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়ার জন্য প্রয়োজন প্রতি বছর প্রায় ৯৮ বিলিয়ন ডলার, আর বৈশ্বিক অভিযোজন তহবিলের ঘাটতি দাঁড়িয়েছে প্রতি বছর ৩৬৬ বিলিয়ন ডলার। তিনি জোর দিয়ে বলেন, আর্থিক কাঠামোতে গ্র্যান্টভিত্তিক তহবিল এবং স্বল্প সুদে ঋণ নিশ্চিত করা প্রয়োজন, যাতে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর ওপর আর্থিক বোঝা না পড়ে। উচ্চ সুদের ঋণ এড়িয়ে অভিযোজনের জন্য দীর্ঘমেয়াদী এবং টেকসই বিনিয়োগে এই তহবিল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

 

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান অভিযোজন তহবিল পরিচালনায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান। তিনি জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কার্যকর এবং ভারসাম্যপূর্ণ নীতি গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি এসডিজি অর্জনে সীমিত সময়ের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে নীতিনির্ধারকদের নীতি থেকে বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘এটি ন্যায়বিচারের প্রশ্ন। আসুন আমরা শুধু কথায় নয়, কার্যকর পদক্ষেপের মাধ্যমে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোকে সহায়তা করি এবং একটি টেকসই ভবিষ্যৎ গড়ে তুলি।’

 

 

 

সূত্রঃপিআইডি