আজকের শিশুরাই আগামী দিনে দেশ পরিচালনায় নেতৃত্ব দেবে - সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা
সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, তোমাদের মতো আমারও একটা স্বপ্ন আছে, একদিন এই দেশটি শিশুদের জন্য হবে। আজকের শিশুরাই আগামী দিনের দেশ পরিচালনায় নেতৃত্ব দেবে।
সমাজ কল্যাণ উপদেষ্টা ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বিশ্ব শিশু দিবস ২০২৫ ও শিশু অধিকার সপ্তাহের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন।
অনুষ্ঠানে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মমতাজ আহমেদের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, ইউনিসেফ প্রতিনিধি Rana Flowers, শিশু বক্তা রূপ সঞ্চারী চর্চা এবং মোঃ সামিউল ইসলাম বক্তৃতা করেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ শিশু একাডেমির মহাপরিচালক দিলারা বেগম।
উপদেষ্টা বলেন, বিশ্ব শিশু দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ' শিশুর কথা শুনব আজ, শিশুর জন্য করব কাজ' । এই স্লোগানে এমন একটি দেশ আমরা গড়বো বিশ্বের সকলে তাকিয়ে বলবে এই দেশটি শিশুদের জন্য। তিনি বলেন, একটি সুন্দর দেশ গড়ার জন্য আজকে আমরা যে সংগ্রাম করছি এবং তোমরা যারা গত বছর যে জুলাই-গণঅভ্যুত্থানে অকপটে অংশগ্রহণ করে বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ গঠনে ভূমিকা পালন করেছো। তাতে প্রমাণ হয়ে যায় তোমরাই দেশের দায়িত্ব নিয়ে নিয়েছো। তিনি বলেন, এত যুগ ধরে যারা দেশ শাসন করে এসেছিলো, অন্যায়, দুর্নীতি যারা করেছে এই অপশক্তির বিরুদ্ধে আঙ্গুলি দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছো। লড়াই করে তোমরা দেশটাকে পরিবর্তন করে দিয়েছো। জুলাই আন্দোলন না হলে আমরা বুঝতেই পারতাম না আমাদের কোমলমতি ছোট শিশুরা আমাদের সোনার দেশটাকে এত ভালোবাসে। তিনি বলেন, আমাদের এই জেনারেশনের শিশু-কিশোররা এক একটা অকুতোভয় বীরসৈনিক। যারা কোনো অন্যায়ে আপস না করে মাথা উঁচু করে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়তে জানে, বাঁচতে জানে।
উপদেষ্টা বলেন, বিশ্ব শিশু দিবস এবং শিশু অধিকার সপ্তাহ ২০২৫ উদ্যাপন উপলক্ষ্যে আমরা একত্রিত হয়েছি বিশেষ একটি উদ্দেশ্যে-আর তা হলো শিশুদের মুখে হাসি, তাদের স্বপ্নের অনুপ্রেরণা, জীবনের মর্যাদা ও নিরাপত্তাই এ দিবসের মূল বিষয়।
শারমীন এস মুরশিদ বলেন, ১৯৫৪ সালে জাতিসংঘের UNICEF - ই প্রথম বিশ্ব শিশু দিবস শুরু করেছিল। শিশুদের কল্যাণ ও অধিকার সুরক্ষার জন্য বিশ্বব্যাপী সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে এ সময় বিশ্বজুড়ে শিশুদের প্রতি ভ্রাতৃত্ব, নিরাপত্তা ও উন্নয়নের গুরুত্ব ফুটে ওঠে। ১৯৮৯ সালে জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদ (UNCRC) চারটি মূল অধিকার নির্ধারণ করে- বেঁচে থাকার অধিকার, বিকাশের অধিকার, সুরক্ষার অধিকার এবং অংশগ্রহণের অধিকার। যদিও বাংলাদেশের সংবিধান ও বিভিন্ন আইন সেগুলো নিশ্চিত করে।
উপদেষ্টা আরো বলেন, আমাদের বর্তমান সরকার শিশুদের খুবই স্নেহ করে এবং গভীর ভালোবাসে। এজন্য তিনি স্নেহশীল সকল শিশুর জন্য নানারকম উন্নয়নমুখী কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেছেন। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো শিশুভিত্তিক বিচার ব্যবস্থার জন্য আলাদা বিশেষ ‘শিশু আদালত’ স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে জুলাই আন্দোলনে নিহত ৬২ জন শিশু পরিবারকে সম্মাননা ও অনুদান প্রদান করা হয়।
এর আগে উপদেষ্টা সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন নিউরো ডেভেলপমেন্ট প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্ট আয়োজিত বিশ্ব সেরিব্রাল পালসি প্রতিবন্ধী ব্যক্তি দিবস ২০২৫ উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। এ সময় সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সচিব ড. মোহাম্মদ আবু ইউছুফ, সেরিব্রাল পালসি সম্পন্ন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সূত্রঃ পিআইডি