শৈশব থেকেই জনসেবার চর্চা করতে হবে

শৈশব থেকেই জনসেবার চর্চা করতে হবে

ছোটবেলা থেকেই শিশু-কিশোরদের মধ্যে জনসেবার অভ্যাস গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রোববার (১ এপ্রিল) দুপুরে চাঁদপুরের হাইমচরে বাংলাদেশ স্কাউটসের ষষ্ঠ জাতীয় কমডেকার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে তিনি এ আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজ এক গৌরবময় শুভ সময়ে এই কমডেকা অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছি। আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করছি। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে স্বীকৃতি অর্জনের মধ্য দিয়ে আমরা জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে আরও একধাপ এগিয়ে গেলাম। এ স্বীকৃতি দেশবাসীর অক্লান্ত পরিশ্রম ও সংগ্রামের সুফল।’

রোভার স্কাউটদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকের শিশু-কিশোররাই হবে আগামী দিনের জাতির কর্ণধার। প্রিয় রোভার স্কাউটবৃন্দ, আগামীতে তোমরাই জাতির নেতৃত্ব দেবে। তাই তোমাদের মধ্যে দেশপ্রেম থাকতে হবে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থাকতে হবে, মানবিক মূল্যবোধ থাকতে হবে। আমি আশা করি তোমরা সেভাবে নিজেদের যোগ্য করে গড়ে তুলবে। যে কোনো সময় দেশের জন্য কাজ করার মানসিকতা থাকতে হবে।’

‘দুর্যোগ-দুর্বিপাকে মানুষের পাশে দাঁড়ায় রোভার স্কাউট। সেবাধর্মী কাজ আরও বিস্তৃত করতে হবে। শিশু-কিশোরদের মধ্যে জনসেবার চর্চা ছোটবেলা থেকেই করতে হবে, লেখাপড়ার পাশাপাশি জনসেবা করতে হবে, লেখাপড়ার সময় থেকে এটা করতে হবে।’

বক্তৃতার শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী স্মরণ করেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। বলেন, ‘তিনি একটি প্রদেশকে একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্রে রূপ দিয়েছিলেন। স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর মাত্র যে সাড়ে ৩ বছর সময় পেয়েছিলেন, সেই অল্প সময়ের মধ্যে তিনি দেশকে স্বল্পোন্নত দেশে পরিণত করেছিলেন। আমরা জাতির পিতার দেখানো উপায়ে দেশ গড়তে কাজ করছি। দেশের উন্নয়ন করে যাচ্ছি। এই উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে হবে।’

শিক্ষার উন্নয়নে সরকারের কর্মসূচি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা লেখাপড়াকে আরও উন্নত ও যুগোপযোগী করার চেষ্টা করছি। শিক্ষার্থীদের সৃষ্টিশীল চিন্তা চেতনায় গড়ে তোলার কাজ করছি।’

সন্ত্রাস-মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে জনগণকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কারও সন্তান যেন মাদক ও জঙ্গিবাদের দিকে না ঝুঁকে, সেজন্য প্রত্যেক মা-বাবা, অভিভাবক, শিক্ষক, ইমাম, ওলামা-মাশায়েখ ও সমাজের গণ্যমান্য বক্তিবর্গ, সবাইকে সচেতন থাকবে হবে। সন্তানদের সঠিক শিক্ষা দিতে হবে। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নির্মূলে স্কাউটদেরও এগিয়ে আসতে হবে। মানুষকে সচেতন করতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সরকার স্কাউট কার্যক্রমের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদান করছে। স্কাউট শতাব্দী ভবন নির্মাণ ও স্কাউটিং সম্প্রসারণের জন্য ১২২ কোটি টাকার প্রকল্প চলমান আছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়সমূহে কাবিং সম্প্রসারণের জন্য আরেকটি প্রকল্প অচিরেই অনুমোদন দেওয়া হবে।’

২০২০ সালে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করা হবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০২০ সালের মধ্যেই আমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত দেশ গড়ে তুলবো, আর ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলবো।’

দীর্ঘ আট বছর পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চাঁদপুর সফরে এসেছেন। সকাল ১১টার দিকে হেলিকপ্টারে করে হাইমচরে পৌঁছান তিনি। এরপর এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি।

বিকেলে প্রধানমন্ত্রী যোগ দেবেন চাঁদপুর স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায়। প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে চাঁদপুরে সাজসাজ রব বিরাজ করছে। 

এ সফরে চাঁদপুরে ৪৮টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী।

ছবি ও সংবাদঃ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম