‘বিএনপি ক্ষমতায় এলে দেশ পাকিস্তানি ধারায় ফিরে যাবে’

‘বিএনপি ক্ষমতায় এলে দেশ পাকিস্তানি ধারায় ফিরে যাবে’

বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট একদিনের জন্য ক্ষমতায় এলেও বাংলাদেশে পাকিস্তানি শাসন-ধারার প্রত্যাবর্তন ঘটবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

শনিবার (১৪ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর গুলিস্তানের মহানগর নাট্যমঞ্চে ‘মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মান ও দেশের বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করার প্রত্যয় নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিনিধি সভায়’ তিনি এ আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি যদি আর একবার ক্ষমতায় আসে, কী হবে বুঝতে পারেন? ২০০১ সালের চেয়েও ভয়াবহ পরিস্থিতি হবে বাংলাদেশে। বিএনপি যদি একদিনের জন্যও ক্ষমতায় আসে, একদিনেই রক্তের নদী হয়ে যাবে বাংলাদেশে। দেশে লাশের পাহাড় হয়ে যাবে। একদিনেই বাংলাদেশ আবার পাকিস্তানি ধারায় প্রত্যাবর্তন করবে।’

২০০১ সালে বিএনপি সরকার গঠনের পর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতনের কথা স্মরণ করে কাদের বলেন, ‘এবারের বিএনপি ২০০১ সালের চেয়েও ভয়াবহ। এই বিএনপি আপনাদের-আমাদের বাড়িছাড়া করবে। মনে কি আছে গ্রামছাড়া আওয়ামী লীগের কর্মীরা এই বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে বছরের পর বছর লঙ্গরখানায় দুঃসহ জীবন যাপন করেছে? মনে কি আছে বরিশাল, ভোলায় গোপালগঞ্জে কতো দুর্বিষহ জীবন যাপন করেছে? দুর্বিষহ জীবন যাপন করেছে এদেশের সংখ্যালঘুরা।’ 

‘নারীদের ধর্ষণ, ঘরে ঘরে অত্যাচার, পুকুরের মাছ বিষ দিয়ে মেরে ফেলেছে। বসত ঘর আগুনে পুড়ে দিয়েছে। এই হচ্ছে বিএনপি। সেই ইতিহাস কি ভুলে গেছেন?’

এ সময় মুক্তিযোদ্ধাদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে কাদের বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের বলছি, ২০০১ সাল মার্কা নির্বাচন যেন না হতে পারে, আগুন সন্ত্রাসের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে যেন না হয়, সে কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া আমাদের আর কোনো আস্থার ঠিকানা নেই।’

সমাবেশের সভাপতি নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান তার বক্তব্যে মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে ছয় দফা দাবি তুলে ধরেন।

দাবিগুলো হলো—মেধার ভিত্তিতে চাকরি দেওয়া হলেও জামায়াত-শিবির, যুদ্ধাপরাধী ও স্বাধীনতাবিরোধীদের সন্তান যেন সরকারি চাকরিতে নিয়োগ না পায়, তা নিশ্চিত করতে হবে; জামায়াত-শিবির ও স্বাধীনতাবিরোধীদের মধ্যে যারা সরকারের ভেতরে থেকে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী কার্যক্রম চালাচ্ছে, তাদের চিহ্নিত করে বরখাস্ত করতে হবে; যুদ্ধাপরাধীদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ও জামায়াত-শিবিরের পরিচালিত প্রতিষ্ঠানসমূহ সরকারের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করতে হবে; মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান ক্ষুণ্নকারী, মুক্তিযুদ্ধ ও শহীদদের নিয়ে কটাক্ষকারীদের দেশদ্রোহী হিসেবে বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে; ২০০১ এবং ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালের তাণ্ডবের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে; কোটা সংস্কারের নামে অগ্নিসংযোগ, নাশকতা, অরাজকতা, নৈরাজ্য ও সন্ত্রাস সৃষ্টিকারীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।’

সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু প্রমুখ।

সূত্র ও ছবি ঃ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম