যোগাযোগে অনেক কঠিন বরফও গলতে পারে
বিএনপির দাবি অনুযায়ী ‘চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে’ তাদের পক্ষ থেকে সংলাপের কথা বলা হলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘সংলাপের এখন আর সুযোগ নেই, এমনকি কোনো সম্ভাবনাও নেই। তবে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যোগাযোগ থাকা ভালো। যোগাযোগটা থাকলে অনেক কঠিন বরফও গলতে পারে।’
রোববার (২৯ জুলাই) দুপুরে সচিবালয়ে নিজ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
সম্প্রতি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একটি অনুষ্ঠানে বলেন, সংলাপের জন্য বিএনপি সব সময়ই প্রস্তুত রয়েছে। এক প্রশ্নের উত্তরে ওই সময় তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ফোন করলে আমরাও ফোন করবো।’
এ বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে ওবায়দুল কাদের বলেন, কোনো শর্ত দিলে ফোন দিতে রাজি নই। আমি কল করলে উনি (মির্জা ফখরুল) কল করবেন, ব্যাপারটা ‘শর্তযুক্ত’। এটা কোনো রাজনৈতিক ভাষা হতে পারে না।
কাদের আরও বলেন, আমাদের সঙ্গে যে কথা-বার্তা হয়নি সেটা না। আমি সৈয়দপুরে ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে কথা বলেছি। উনি পাশের রুমে ছিলেন, আমি সেখানে গিয়ে বলেছি- ফখরুল ভাই কেমন আছেন? ওনার মায়ের মৃত্যুর পর আমি ফোন করেছি। উনি কখনও আমাকে ফোন করেননি।
‘আমি জানি উনার (মির্জা ফখরুল) সমস্যা আছে। উনাদের দলের অফিসে একজন আরেকজনকে সরকারের দালাল মনে করেন। ফোন করলে কার রোষানলে পড়বেন, লন্ডনের রোষানলেও পড়তে পারেন। তবে আমি ফোন করলে তিনি ফিরতি ফোন করবেন এই শর্ত কাঙ্ক্ষিত নয়।’
অপর এক প্রশ্নের উত্তরে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচন ভালো হবে। কিন্তু বিএনপি যদি না জেতে তাহলে ভালো হবে না। আমি জানি না এই সংস্কৃতি থেকে তারা কবে বেরিয়ে আসবে। তাদের ভাবনা চিন্তা ইতিবাচক হলে অনেক কঠিন বরফ গলে যাবে।
জিতলে ভালো আর না জিতলে নির্বাচন ভালো নয়- এই সংস্কৃতি থেকে বিএনপিকে বেরিয়ে আসতে হবে বলেও মনে করেন ওবায়দুল কাদের।
কয়েকটি রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আমরা এক সময় এক সঙ্গে রাজনীতি করেছি। তিনি এক সময় বাকশালের ছাত্র সংগঠন জাতীয় ছাত্রলীগের সম্পাদক ছিলেন, আমরা সবাই সদস্য ছিলাম।
‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর আমরা এক সঙ্গে রাজপথে প্রতিবাদে নেমেছি। উনার সঙ্গে দেখা হলে, সব বিষয় নিয়েই কথা-বার্তা, আলোচনা হয়েছে। তারা আটটি দলের বাম গণতান্ত্রিক জোট করেছেন। তারা আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কারো সঙ্গেই যাবেন না। তারা বাম জোটগতভাবেই আগামী নির্বাচনে অংশ নেবেন,’ বলেন তিনি।
বিভিন্ন রাজনীতিকের সঙ্গে আলোচনার কথা উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা আমাকে বলেছেন, তারা মুক্তিযুদ্ধের যে স্পিরিট সেটাকে সামনে রেখেই এগিয়ে চলেছেন। কাদের সিদ্দিকী, আ স ম আব্দুর রব, কর্নেল (অব.) অলির সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আমি বলেছি- সভা সমাবেশে কোনো সমস্যা হলে আমাকে জানাবেন, যোগাযোগ করবেন। এসব দলের নেতাদের সঙ্গে যে আলোচনা হয়েছে সেটা একেবারেই প্রাথমিক। আমাদের জোটে তাদের আমরা চাই কি-না তার চেয়ে বড় কথা আমাদের জোটে তারা আগ্রহী কি-না। তাদের তো আগ্রহ থাকতে হবে। জাতীয় পার্টি মহাজোটে আছে, থাকবে।
বড়পুকুরিয়ায় কয়লা চুরি সংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তরে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, এত উন্নয়ন যেখানে হচ্ছে, চাঁদের মধ্যে কলঙ্ক একটু হতেই পারে। কিন্তু তাই বলে সরকার দায়িত্বহীন নয়। যে কোনো ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে গ্রেফতার অভিযোগ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, পুলিশ বলছে- যাদের গ্রেফতার করেছে তাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও মামলা আছে।
সূত্র ও ছবি ঃ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম