চিনি রফতানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাচ্ছে ভারত

চিনি রফতানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাচ্ছে ভারত

বাংলাদেশে চিনি রফতানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা চেয়েছে ভারত। বৃহস্পতিবার (১ নভেম্বর) সচিবালয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের সঙ্গে দেখা করে এ দাবি জানিয়েছেন সে দেশের ‘ফুড অ্যান্ড পাবলিক ডিস্ট্রিবিউশন’র সেক্রেটারি শ্রী রভিকান্ত।

দুপুরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ সংক্রান্ত এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ভোক্তাদের কথা ভেবে বাংলাদেশ এটা নিয়ে চিন্তা করছে।

তিনি বলেন, ভারত বাংলাদেশে চিনি রফতানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা চায়। এজন্য শুক্রবার (২ নভেম্বর) ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ বা টিসিবি এবং সে দেশের ‘এসটিসি’র মধ্যে একটি সমঝোতা স্বাক্ষর হবে।

মন্ত্রী বলেন, আমরা ‘সাফটা’র আওতায় ‘এলডিসি’ভুক্ত দেশ হিসেবে ভারতে শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা পেয়ে থাকি। ভারত এখন আমাদের কাছে চিনি রফতানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা দাবি করছে। বর্তমানে বাংলাদেশে চিনি আমদানি পণ্য হিসেবে ‘নেগেটিভ’ লিস্টে আছে এবং এজন্য আমদানিকারককে ৪০ শতাংশ শুল্ক দিতে হয়। তারা চিনিকে পজেটিভ লিস্টে আনার জন্যও অনুরোধ করেছে।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, ভারতে ভোজ্যতেল রফতানিতে বর্তমানে বাংলাদেশ ভালো করছে। এরইমধ্যে সিটি গ্রুপ, বসুন্ধরা, মেঘনা গ্রুপ, টিকে ও সেনাকল্যানকে ভোজ্যতেল রফতানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ভারত বলছে, ভোজ্যতেল রফতানিতে আমদানির পর যেন আরও ৩০ ভাগ মূল্যসংযোজন করা হয়। বর্তমানে এ খাতে বাংলাদেশ শুল্কমুক্ত সুবিধা পাচ্ছে।

পাটপণ্য রফতানিতে এন্টি ডাম্পিং নিয়েও কথা হয়েছে। এটা সম্ভবত থাকছে না। ভারতও এটা নিয়ে চিন্তা করছে বলে জানান তিনি।
 
সংলাপে সিদ্ধান্ত হবে সংবিধান অনুযায়ী:
সংলাপে সব বিষয় নিয়ে আলোচনা হলেও সংবিধান অনুযায়ী সিদ্ধান্ত হবে বলে জানিয়েছেন তোফায়েল আহমেদ।

তিনি বলেছেন, ড. কামাল হোসেন চিঠি দেয়ার পর প্রধানমন্ত্রী আমাদের সঙ্গে আলোচনা করে সংলাপের সিদ্ধান্ত নেন। তারা তাদের চিঠিতে সাত দফা ও ১১ লক্ষ্য নিয়ে আলোচনা করতে চেয়েছেন। আমরা জানিয়েছি, সংবিধান অনুযায়ী আলোচনা হবে। সুতরাং সব বিষয়ে আলোচনা হতে পারে। কিন্তু সিদ্ধান্ত হবে সংবিধান অনুযায়ী।

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে তোফায়েল আহমেদ বলেন, আমাদের ভবিষ্যৎ সুনির্দিষ্ট। একটি অবাধ, অংশগ্রহণমূলক, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্পন্ন করা আমাদের সবার লক্ষ্য। এ কাজটি করে নির্বাচন কমিশন, সরকার নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করে। সুতরাং আমাদের লক্ষ্য সুনির্দিষ্ট। আলোচনা যাই হোক, আমরা সবাই নির্বাচনে অংশ নেবো এই সরকারের অধীনে এবং নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানে। এখানে সমস্যার কিছু দেখি না।
 
খালেদা জিয়া ও সব রাজনৈতিক বিবেচনায় বন্দিদের মুক্তির দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ’৭৫ সালের পর আমরা অনেকেই বন্দি ছিলাম, আমাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ ছিলো না। বঙ্গবন্ধুও বন্দি ছিলেন, যেটা মানুষ গণঅভ্যুথান করে তাকে মুক্ত করেছিলো। কিন্তু খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়াসহ অন্য যারা আছেন তারা সুনির্দিষ্ট অভিযোগে বন্দি আছেন। যাদের বিরুদ্ধে মামলা থাকে তারা তো রাজবন্দি নয়।

সংলাপ যেন আসন ভাগাভাগির না হয় মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমের এমন মন্তব্যের প্রেক্ষিতে তোফায়েল আহমেদ বলেন, কমিউনিস্ট পার্টি যখন আমাদের সঙ্গে ছিলেন, একসঙ্গে আমরা তিন জোট মিলে রুপরেখা করেছিলাম। তখন বিএনপির সঙ্গে আমাদের আসন ভাগাভাগির সিদ্ধান্ত হয়েছিলো। তখন দুই নেত্রী ১৫০টি করে সিটে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো। কিন্তু এখন সেদিন নাই। সংলাপে বসে আসন ভাগাভাগি সেলিম কিভাবে সেই স্বপ্ন দেখলেন আমার জানা নেই।

সংলাপে যারা যাচ্ছেন অধিকাংশই আওয়ামী লীগের নেতা ছিলেন, এটি ঘরের লোকদের ঘরে ফেরানোর চেষ্টা কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই। 

সূত্রঃ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম