আজ থেকে এক টাকাও খেলাপি ঋণ বাড়বে না: অর্থমন্ত্রী
আজ থেকে আর এক টাকাও খেলাপি ঋণ বাড়বে না। বরং সামনে ধীরে ধীরে খেলাপি ঋণের হার কমবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বৃহস্পতিবার (১০ জানুয়ারি) শেরেবাংলা নগরে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রীর নিজ কক্ষে অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল একথা বলেন। এর আগে দেশের সব ব্যাংকের মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন অর্থমন্ত্রী।
অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমাদের অন্যতম চ্যালেঞ্জ নন-পারফরমিং লোন (এনপিএল-ঋণখেলাপি)। আমরা আজ বঙ্গবন্ধুর মাজার জিয়ারত করেছি। ভালো একটা দিনে ভালো কাজ করেছি। ব্যাংকের মালিকদের সঙ্গে বসে ঋণখেলাপি নিয়ে আলোচনা করেছি। আমরা নন-পারফরমিং লোন ভেরিফাই করবো। এরপরেই আমাদের কাজ শুরু হবে। তবে নন পারফরমিং লোন নিয়ে যেভাবে লেখা হয় সেভাবে বাড়েনি। আমার মনে হয় এটা ম্যানেজেবল। তারপরেও জোর দিয়ে বলছি কোনোভাবেই আর বাড়বে না।’
তিনি আরও বলেন, কার কাছ থেকে টাকা পাবো, কোন প্রতিষ্ঠান টাকা নিয়ে দিচ্ছে না এটা শনাক্ত করবো। এরপরেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
প্রভাবশালীরা রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ব্যাংকের ঋণ দেয় না-এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রভাবশালীরাই ব্যবসা-বাণিজ্য করে। প্রভাবশালীরাই দেশে ৮২ শতাংশ। তারা প্রভাব না খাটালে দেশে অগ্রগতি হবে না, কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে না। প্রভাবশালীরাই দেশে দারিদ্র্য কমায়।
এনপিএল (ঋণখেলাপি) প্রসঙ্গে মুস্তফা কামাল বলেন, দেশে এনপিএলের হার ১১ থেকে ১২ শতাংশ। এর থেকে অন্য দেশে আরও বেশি। আমাদের পাশের দেশ ভারতে এনপিএল আরও বেশি। এনপিএল কমলে ব্যাংকে সুদের হার কমে যাবো। সুতরাং এটা কোনোভাবেই বাড়তে দেবো না।
বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর চেয়ারম্যানদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি)-এর চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, এনপিএল কমানো নিয়ে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। অনেকে আছে ব্যাংকের টাকা নিয়ে চলে গেছে। তাদের বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নেবো। অনেকে ব্যাংকের টাকা নিয়ে ভালো ব্যবসা করছে, কিন্তু হঠাৎ করেই ব্যবসায় ধস। ফলে এসব ব্যবসায়ীরা ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করতে পারছে না। এসব ব্যবসায়ীদের কিভাবে সুবিধা দেওয়া যায় সেই বিষয়ে আমরা আলোচনা করবো।
তিনি আরও বলেন, তারপরও বলতে পারি বাংলাদেশে খেলাপি ঋণ উদ্বেগজনক স্থানে পৌঁছায়নি। গড়ে ১১ থেকে ১২ শতাংশ। এর থেকে ভারত, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়ায় বেশি।
ঋণখেলাপি বৃদ্ধিতে ব্যাংক কর্মকর্তা জড়িত থাকে কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে বিএবি চেয়ারম্যান বলেন, কোনো ব্যাংক কর্মকর্তা জড়িত থাকলে ছাড় দেওয়া হবে না। ঋণখেলাপি আর বাড়বে না।
এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি খাত উন্নয়ন বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, প্রিমিয়ার ব্যাংকের চেয়ারম্যান এইচ বি এম ইকবালসহ সব ব্যাংকের মালিকেরা উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র ও ছবিঃ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম