দুর্নীতিতে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘দুর্নীতি, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদের সঙ্গে যেই জড়িত থাক, শাস্তি তাকে পেতেই হবে। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদকে আমরা কোনোভাবে প্রশ্রয় দেবো না। দুর্নীতি করলে কোনোভাবে ছাড় দেব না। যারা দুর্নীতি করবে শাস্তি তাদের পেতেই হবে’। ‘যে দল দুর্নীতিকে নীতি হিসেবে গ্রহণ করে, দুর্নীতিবাজকে নেতা হিসেবে মেনে নেয়, সেই দল ক্ষমতায় গিয়ে দুর্নীতি ছাড়া আর কী করবে?’
দশম জাতীয় সংসদের ১৯তম অধিবেশনের সমাপ্তি ভাষণে এ হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
দুর্নীতি দমন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দুর্নীতিকে আমরা প্রশ্রয় দিতে চাই না। আমাদের এমপি-মন্ত্রী কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে, তাদের (দুদকের) যদি সন্দেহ হয়, তাহলে তাদের ডেকে নিয়ে জিজ্ঞেস করতে পারে। আমরা কোনও হস্তক্ষেপ করি না, করবো না। কারও দুর্নীতি প্রমাণ হলে যে সাজা পাবে। কোর্ট আদেশ দিলে আমাদের মন্ত্রীরা সেখানে গিয়ে হাজির হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘আজকে বিএনপি নেত্রীর সাজা হয়েছে। এই মামলা করেছিলো তত্ত্বাবধায়ক সরকার। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের নামে বিদেশ থেকে টাকা আসে কিন্তু সেই টাকা এতিমরা পায়নি। সেই টাকা তিনি (খালেদা জিয়া) আত্মসাৎ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘যারা গঠনতন্ত্রে দুর্নীতিকে আশ্রয় দেয় আর দুর্নীতিবাজকে নেতা হিসেবে গ্রহণ করে, তারা জনগণের জন্য কী কাজ করবে? তারা লুটপাট করতে পারবে। মানুষ খুন করতে পারবে। দুর্নীতি করতে পারবে কিন্তু মানুষের কল্যাণে কাজ করতে পারবে না।’
বিএনপি সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে দলের নেতা হিসেবে মেনে নিয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘একজন সাজাপ্রাপ্ত হয়ে জেলে যাওয়ার সঙ্গে-সঙ্গে সাজাপ্রাপ্ত আরেকজনকে দায়িত্ব দিলো, তিনি আবার দেশেও থাকেন না, পলাতক। দেশের ভেতর বিএনপিতে কি একজন লোকও নেই, যে যাকে দায়িত্ব দেওয়া যায়? অবশ্য বিএনপির প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই তো দুর্নীতির মামলা রয়েছে। এই যদি রাজনৈতিক দলের অবস্থা হয়। তাহলে সেই দল দেশকে কী দেবে?’
তিনি বলেন, বিএনপি নেত্রী কারাগারে যাবেন, এটা বোধ হয় তিনি আগেই টের পেয়েছিলেন। তাই রায়ের আগেই দলের গঠনতন্ত্র পরিবর্তন করে দুর্নীতিকেই নীতি হিসেবে গ্রহণ করে বিএনপি। অপরাধীকেই নেতা হিসেবে মেনে নেয়। যাকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করলো সেও সাজাপ্রাপ্ত।
বিচারের রায় নিয়ে বিএনপির কোনও কোনও নেতা হুমকি দিচ্ছে মন্তব্য করে সংসদ নেতা বলেন, ‘চোরকে চোর বলিও না, দুর্নীতিবাজকে দুর্নীতিবাজ বলিও না। এটাই শিক্ষা হবে বাংলাদেশে? অপরাধীদের অভয়ারণ্য হবে? তারা তো হবে না। আমরা তা চাই না। আমরা বাংলাদেশকে শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। ২০২১ সালে আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত দেশ হিসেবে পালন করতে চাই। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবেই। বাংলাদেশকে আমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ করে গড়ে তুলবোই।
সূত্রঃ বিডিপ্রতিদিন/ ২৮ জানুয়ারি, ২০১৮
ছবিঃ সংগৃহীত