মাছের প্রজননে সময় না দিয়ে মানুষ দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিচ্ছে -মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

মাছের প্রজননে সময় না দিয়ে মানুষ  দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিচ্ছে -মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

 

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, হাওরে মাছ প্রকৃতির দান। প্রকৃতির বিরুদ্ধাচারণ করে মাছের প্রজননের জন্য নির্দিষ্ট সময় না দিয়ে মানুষ ভোক্তা ও আহরণকারী হিসেবে অত্যন্ত দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিচ্ছে।

 

আজ সিলেট নগরীর সুবিদবাজারস্থ খাঁনস্ প্যালেস কনভেনশন হলে ‘হাওরে মৎস্যসম্পদ রক্ষায় স্টেকহোল্ডারস কনসাল্টেশন ওয়ার্কশপ’ এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।   

 

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, হাওরে মাছের গতিপথে অপরিকল্পিত বাঁধ দিয়ে ও রাস্তা নির্মাণ করে মাছের বিচরণ ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করা হয়েছে। নিষিদ্ধ জাল দিয়ে মাছ ধরে দেশীয় প্রজাতিগুলোকে ধ্বংস করা হয়েছে। 

 

মৎস্য সম্পদ রক্ষায় যারা মাছ ধরছেন তাদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, এখন মৎস্যজীবীর আগে প্রকৃত মৎস্যজীবী, অরিজিনাল মৎস্যজীবী-এরকম যে ভাষা চলে আসছে-এটার মানে হচ্ছে এ পেশায় যারা নিয়োজিত তাদের প্রতি অনেক অন্যায় করা হয়েছে। যারা সত্যিকারের মৎস্যজীবী তাদেরকে মূল্যায়ন করা হয়নি। অতি মুনাফাকারীরা ব্যবসার নামে মাছের ক্ষতি করছে। এজন্য প্রকৃত মৎস্যজীবীদের স্বার্থে দেশীয় প্রজাতির মাছ সংরক্ষণ করা অত্যন্ত জরুরি। মাছ ধরা পেশাকে আধুনিকায়ন করতে হবে, যাতে তারা সম্মানের সাথে বাঁচতে পারেন।

 

মাছের প্রজননকালীন মাছ ধরা নিষিদ্ধের বিষয়ে হাওর অঞ্চলে বিলবোর্ড ও রেডিও-টেলিভিশনে এ সংক্রান্ত প্রচারণা করা যেতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, হাওর অঞ্চলে মাছ ধরা নিষিদ্ধের পাশাপাশি পর্যটনও এসময়ে নিষিদ্ধ করতে হবে। 

 

উন্মুক্ত আলোচনায় সিলেট বিভাগের সাত জেলার মৎস্যজীবী প্রতিনিধিরা বলেছেন, মাছের প্রজনন সমস্যা হচ্ছে। ইতোমধ্যে অনেক প্রজাতি বিলুপ্তি হয়েছে। আরো প্রজাতি বিলুপ্তির পথে। ফসল রক্ষায় বাঁধের কারণে মাছের প্রজনন ব্যাহত হচ্ছে। অধিক কীটনাশক ব্যবহার, হাওরের ইজারা প্রথা, সেচ দিয়ে মাছ শিকার-সহ বিভিন্ন কারণে হাওরের মাছ হারিয়ে যাচ্ছে। মাছ ডিম কম দিচ্ছে ও সব ডিম থেকে বাচ্চাও ফুটছে না। বিভিন্ন জাল দিয়ে মৎস্য শিকার করা হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে রক্ষা পেতে তারা বিলগুলো খনন, জাল নিষিদ্ধ, ফসলি জমিতে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার কমানোর ওপর জোর দিয়েছেন মৎস্যজীবীরা। তারা  জৈষ্ঠ্য-আষাঢ় মাসে মা মাছ ধরা নিষেধের ওপর গুরুত্বারোপ করে নিষিদ্ধকালীন মৎস্যজীবীদের সরকারি সহায়তা দেওয়ার আহ্বান জানান।

 

মৎস্য অধিদপ্তর সিলেট বিভাগ আয়োজিত মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এটিএম মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে আরো বক্তৃতা করেন, সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার আবু আহমদ ছিদ্দীকী, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সৈয়দা নওয়ারা জাহান, সিলেট বিভাগের জেলা প্রশাসকবৃন্দ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ, সিলেট বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এবং মৎস্যজীবীরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।

 

 

 

সূত্রঃপিআইডি