ডিজিটাল আইন নিয়ে আতঙ্কিত না হতে বললেন প্রধানমন্ত্রী

ডিজিটাল আইন নিয়ে আতঙ্কিত না হতে বললেন প্রধানমন্ত্রী

প্রস্তাবিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে আতঙ্কিত না হতে সাংবাদিকদের পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

তিনি বলেছেন, সাইবার ক্রাইম নীতিমালা করছি ক্রাইম রোধ করার জন্য। আমি সাংবাদিকদের বলতে চাই, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। সরকার তাদের অসুবিধা হয় এমন কিছু করবে না। 

এছাড়া অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা হওয়া উচিত বলেও মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।
  
বৃহস্পতিবার (১৭ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) প্রতিনিধি সভায় তিনি এসব কথা বলেন। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সাংবাদিকদের কল্যাণে সরকার সাধ্যমতো কাজ করছে। আমরা ১২ হাজারের বেশি সাংবাদিককে প্রশিক্ষণ দিয়েছি। বিভিন্ন ভাষা শেখা সাংবাদিকদের দায়িত্ব। এজন্য কয়েকটি অ্যাপস চালু করা হয়েছে। 

বর্তমান সরকারের আমলে গত সাত বছরে সাতহাজারেও বেশি সংবাদপত্র নিবন্ধন পেয়েছে বলে জানান তিনি। 


নিজেকে সাংবাদিক পরিবারের একজন সদস্য হিসেবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতাও সাংবাদিকতা করেছেন। যা তিনি তার আত্মজীবনীতে লিখে গেছেন। সে অর্থে আমিও আপনাদের পরিবারেরই একজন সদস্য। দাবি-দাওয়া ছাড়াই আমি সাংবাদিকদের কল্যাণে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছি। 

স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের কথা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমার দেশে ফিরে আসার পর আজ ৩৭ বছর পূর্ণ হলো। কিন্তু প্রেসের কাছ থেকে সহযোগিতা পাইনি। কিন্তু আমি সেগুলো নিয়ে মাথা ঘামাইনি। কারণ আমি জানি আমি কী করছি। ন্যায় ও সত্যের পথে থাকলে সবই সম্ভব।  

‘তবে যারা আমাদের পাশে থেকেছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাই। আশা করি সরকারের অর্জনগুলো দেশের মানুষের কাছে আপনারা তুলে ধরবেন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্মাসেতুতে দুর্নীতি হয়েছে- এ নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছে, কিন্তু দুর্নীতি কী প্রমাণ করতে পেরেছে? বিশ্ব ব্যাংক প্রমাণ করতে পারেনি। কানাডার ফেডারেল কোর্ট বলে দিয়েছে এসব বানোয়াট ছিল। নিজেদের টাকায় পদ্মাসেতু করেছি। 

‘এই একটি ঘটনাই আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। আমরা কারও কাছে হাত পেতে

চলবো না। আমরা নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে পেরেছি। বাঙালি বীরের জাতি, এ জাতি কারও কাছে হাত পেতে চলে না।’

আওয়ামী লীগ জনগণের জন্য রাজনীতি করে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমরা জনগণের জন্য রাজনীতি করি, জনগণের ভোটের অধিকার আমরাই ফিরিয়ে এনেছি। এই দেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে। গণতন্ত্র আছে বলেই সেটা সম্ভব হচ্ছে। 

‘বিএনপির আমলে ঢাকা-১০ আসনে ভোট ডাকাতি হয়েছে। কেউ ভোট দিতে পারেনি। ভোট জনগণের উৎসব, এই উৎসবের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করছি। দেশে ছয় হাজারের মতো নির্বাচন হয়েছে কেউ প্রশ্ন তুলেনি। 

‘কিন্তু বিএনপি নির্বাচন নিয়ে কথা বলছে। ২০০১ সালের নির্বাচনকে প্রভাবিত করে তারা ক্ষমতায় এসেছিল। তারা যখন ভোটে পারে না তখন ষড়যন্ত্র শুরু করে।’ 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সমুদ্র বিজয় করেছি, আকাশ জয় করেছি। এটা নিয়েও তারা (বিএনপি) অনেক কিছু বলছে। সাবমেরিন কিনেছি এটা নিয়েও তাদের কথা। 

‘৫৭তম দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছে। স্যাটেলাইট সম্পর্কে অনেকে বলেছেন- রকেট উড়লো, আমরা কী পেলাম! কিন্তু এর মাধ্যমে যে কী ধরনের উন্নয়ন হবে সেটা বোঝার সাধারণ জ্ঞান যদি না থেকে তাহলে তাদের দিয়ে এই দেশ কীভাবে চলবে, তা আমার বোধগম্য নয়,’ যোগ করেন শেখ হাসিনা। 

বিএফইউজে সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুলের সভাপতিত্বে সমাবেশে সাংবাদিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন। 

সূত্র ও ছবি ঃ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম